সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
পাহাড়ের পরতে পরতে লুকিয়ে থাকা সবুজ রুপ বৈচিত্রের শ্যামলভূমি রাঙামাটি জেলা। এর অবারিত সৌন্দর্য দেশী-বিদেশী পর্যটকদের মনে দোলা দেয় প্রতি মুহুর্তে, যার টানে পর্যটকরা আবারও ফিরে আসে প্রাকৃতিক নৈসর্গের লীলাভূমি এ জেলায়। রাঙামাটির কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ প্রকল্প, কর্ণফুলী হ্রদ, সুবলং ঝর্ণা, কাপ্তাই লেক, ঝুলন্ত ব্রিজ, সাজেক ভ্যালী এর সৌন্দর্যে হয়ত অনেকেই মুগ্ধ হয়েছেন। তবে অপূর্ব সৌন্দর্যের রঙরাং পাহাড় চূড়ায় না উঠলে আপনার রাঙামাটি ভ্রমণই অসম্পূর্ন থেকে যাবে।
কীভাবে যাবোঃ
ঢাকার কলাবাগান, কমলাপুর ও ফকিরাপুল থেকে রাঙামাটিগামী যেকোনো বাসে চেপে যেতে হবে রাঙামাটি শহর। এরপর নৌকা রিজার্ভ করুন। নৌকা ভাড়া ১ হাজার ৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। ভাড়া চুকানোর সময় প্যাকেজে সুবলং ঝরনার সঙ্গে সুবলং বাজার ও রঙরাং বা টিঅ্যান্ডটি পাহাড়ও অন্তর্ভুক্ত করুন। আর সুবলং সেনাক্যাম্পে মিষ্টি খাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। যেকোনো সময় রাঙামাটি ভ্রমণ অনন্য। তবে প্রকৃত সৌন্দর্য দেখতে চাইলে বর্ষাকাল এবং এর পরবর্তী সময়কে বেছে নিন।
কী খাবোঃ
এখানে খাওয়ার কোন সুবিধা নেই।আপনাকে রাঙ্গামাটি থেকে খাবার সাথে করে নিতে হবে। বিশেষ করে পানি।
কোথায় থাকবেনঃ
রাঙামাটিতে বিভিন্ন মানের গেস্ট হাউজ ও আবাসিক হোটেল রয়েছে। রাঙামাটি শহরের পুরাতন বাসন্ট্যান্ড ও রিজার্ভ বাজার এলাকায় লেকের কাছাকাছি হোটেল ঠিক করার চেষ্টা করুন। তাহলে হোটেল থেকে কাপ্তাই লেকের পরিবেশ ও শান্ত বাতাস উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়া কম খরচে থাকতে বোডিং এ যোগাযোগ করতে পারেন। বোডিংগুলোতে থাকতে খরচ কম হলেও এগুলোর অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। উল্লেখযোগ্য কিছু আবাসিক হোটেল হল: পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স, হোটেল গ্রিন ক্যাসেল, পর্যটন মোটেল, রংধনু গেস্ট হাউজ, হোটেল সুফিয়া, হোটেল আল-মোবা, হোটেল জজ, হোটেল মাউন্টেন ভিউ, হোটেল ডিগনিটি ইত্যাদি।
যা যা দেখবেনঃ
বালুখালী থেকে কাপ্তাই লেকে ঘুরাঘুরি করার ফাঁকে অপনার চোখে পড়বে অদূরের এক পাহাড়। যার থেকে আপনি নজর ফেরাতে পারবেন না। যাকে দেখে মনে এসে যেতে পারে অসংখ্য কবিতা। রঙরাং পাহাড়ের কোলঘেঁষে বয়ে গেছে মোহনীয় কর্ণফুলী। কর্ণফুলীর পাশে বরকল ও জুরাছড়ি উপজেলায় অবস্থান রঙরাং পাহাড়ের।রঙরাং পাহাড়ে উঠতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে নৌকা নিয়ে যেতে হবে সুবলং ঘাটে। তারপর পাহাড়ে ওঠার অনুমতির জন্য আপনাকে সেনা ক্যাম্পে যেতে হবে। সেখানে সহজেই পাহাড়ে ওঠার অনুমতি পাওয়া যায়। পাহাড়টা দেখে যদি মনে করে থাকেন খুব সহজেই ওঠা যাবে এ পাহাড় চূড়ায় তাহলে ওপরে উঠতে গিয়ে প্রথমেই হোঁচট খাবেন খানিকটা। কারণ এই পাহাড় বেয়ে ওপরে ওঠার পথ বেশ খাড়া। শরীরের যথেষ্ট ঘাম ঝরিয়ে তবেই আপনি পাহাড়ের চূড়ার দেখা পাবেন। ২০ থেকে ৩০ মিনিটের ট্রেকিং করেই আপনি উঠে যেতে পারবেন রঙরাং এর চূড়ায়। খাড়া এ পাহাড়ে উঠতে কষ্ট হলেও সেটি চাপা পড়ে যাবে চারপাশের অপরুপ সৌন্দর্যের হাতছানিতে। রঙরাং আনন্দে সাজিয়ে দেবে আপনার মন। রঙরাং পাহাড় চূড়াটি যেন রাঙামাটির সমস্ত সৌন্দর্যই ধারণ করে রেখেছে।