সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের আয়তন ১৯৭৭ একর (৮ বর্গ কিলোমিটার)।২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের লোকসংখ্যা ৬,৭২৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩,৫৬৬ জন এবং মহিলা ৩,১৬৩ জন।টেকনাফ উপজেলার সর্ব-দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মাঝে সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের অবস্থান। উপজেলা সদর থেকে এ ইউনিয়নের দূরত্ব প্রায় ৪২ কিলোমিটার। এ ইউনিয়নের চতুর্দিকে বঙ্গোপসাগর, তবে উত্তরে টেকনাফ উপজেলার মূল ভূখণ্ডের সাবরাং ইউনিয়ন এবং পূর্বে মায়ানমারের মূল ভূখণ্ডের রাখাইন প্রদেশ অবস্থিত।
কিভাবে যাবোঃ
অক্টোবর থেকে মার্চ এই পাচ মাস সাধারনত সেন্টমার্টিন ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। যদি এ বছর (২০১৭-২০১৮) তে রোহিঙ্গা ইস্যুর কারনে নভেম্বরের শেষে জাহাজ চালু হয় তবে ভ্রমণকারি কারো ইচ্ছেতে ভাটা পরেনি মোটেও। প্রচুর টুরিস্ট এবং ট্রাভেলার’রা যাচ্ছেন প্রতিদিন। এর পাশাপাশি অনেকেই আছেন ছাত্র বা, বাজেট ট্রাভেলার যারা নিজে যেতে চান বা, পরিবার নিয়ে ঘুরে আসতে চান তাদের জন্য আজকের লেখা।
সেন্টমার্টিন আইল্যান্ড বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত একটি প্রবালদ্বীপ। এটি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ হতে প্রায় ৯ কিলো দক্ষিণে এবং মায়ানমার-এর উপকূল হতে ৮ কিলো পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত। যেতে হলে তাই টেকনাফ থেকে জাহাজ / ট্রলার ছাড়া কোন উপায় নেই।
ট্যুর প্ল্যানঃ অবশ্যই ২ রাতের ট্যুর প্ল্যান করবেন কারন প্রথমদিন যেতে যেতেই দুপুর হয়ে যাবে। তরিঘরি করে বিকেলটা ঘুরে পরদিনই আবার ফেরত আসতে নিশ্চয়ই খুব ভালো লাগবে না। ২ রাত প্ল্যান করে আসলে ধীরে সুস্থে পুরোটা ঘুরে যেতে পারবেন সময় নিয়ে হেসে খেলে।
রওনার দিনঃ ঢাকা থেকে শ্যামলি, হানিফ, সেন্টমার্টিন পরিবহন সহ অনেক বাস আছে যারা টেকনাফ যায় এই সিজনে। নিজের পছন্দমতো বাস সিলেক্ট করে ১ সপ্তাহ বা, ১০ দিন আগেই টিকেট করে রাখুন কারন এই সময়ে অনেক রাশ থাকে। সন্ধ্যা ৬-৭ টার গাড়ি ঠিক করুন। পরদিন ৯ টায় শীপ।
১ম দিনঃ সকালে ঘাটে নেমে নাস্তা করার হোটেল পাবেন এখানেই নাস্তা করে নিন কারন সেন্টমার্টিন পৌছতে বাজবে ১টা। নাস্তা সেরে শীপে উঠে পড়ুন। সেন্টমার্টিন পৌছে হোটেল এ যেতে ভ্যান নিতে পারেন তবে দাম অনেক চড়া হবে কারন এই আনা-নেয়া টাই তাদের ব্যবসা। এছাড়া অন্য সময় ভ্যান কোন কাজে লাগে না। হোটেলে/রিসোর্টে গিয়ে সমুদ্রে নামতে পারেন বা, ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে বিকেলে সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারেন। রাতে রিসোর্টে বলে রাখলে বার-বি-কিউ ব্যবস্থা করবে তারা।
২য় দিনঃ নাস্তা সেরে সকালে ট্রলার ঘাটে চলে যান ছেড়াদ্বীপ এ যাওয়ার ট্রলার পাবেন অনেক। দরদাম করে বাছাই করে একটায় উঠে পরুন। ১০-১১ টার মধ্যে ফেরত আসুন তারপর হাল্কা খেয়ে একটা সাইকেল ভাড়া করে পুরো সেন্টমার্টিন চক্কর দিতে পারেন যদি এনার্জি থাকে। ঘন্টা তিনেকের মধ্যে মোটামুটি ঘুরা শেষ হয়ে যাবে তবে অভিজ্ঞতা হবে অসাধারন। কারন অনেক বিচ পাবেন যেখানে কোন মানুষ যায় না। হোটেলে ফেরত এসে দুপুরের লাঞ্চ সেরে বিকেলে আবারো সূর্যাস্ত দেখে কাটাতে পারেন বা, বাজারে যেতে পারেন। অনেক হোটেলে মাছ ফ্রাই করে দেয় পছন্দ করে দিলে তবে সাবধান অনেক মাছ ই পচা থাকে অনেক সময়। তবে, মশলা মাখানো ছাড়া মাছ বাছাই করে দিলে ঠকবেন না।
৩য় দিনঃ আজকে টেকনাফ চলে যেতে হবে তাই দূরের কোন প্ল্যান করা যাবে না। সকালে বিচে দাপাদাপি করে কাটাতে পারেন। তারপর ১১-১২টায় লাঞ্চ সেরে ঘাটে চলে যান। যদিও জাহাজ ছারে ৩টায় তবে অনেক ভীড় আর, গ্যাঞ্জাম থেকে বাচতে আগেই চলে যান। সন্ধ্যার পরপরই শীপ পৌছাবে টেকনাফ ঘাটে। ঘাট থেকে নেমেই বাস কাউন্টার। তারপর সোজা ঢাকা। বাসের উঠার আগে নাস্তা নিয়ে নিতে পারেন বা, খেয়ে নিতে পারেন কারন অনেক লম্বা বাস জার্নি যদিও কুমিল্লায় থামবে।
কি কি খাবেনঃ
সমুদ্রে গেলে সাধারনত সি ফুড খাওয়াই উত্তম। সেন্টমার্টিন বাজারে, বিচের পাড়ে, যে রিসোর্টে / হোটেলে থাকবেন যেখানেই সুযোগ পাবেন সামুদ্রিক মাছ ট্রাই করবেন। কোরাল বার বি কিউ বেস্ট, রুপচাদা, রেড স্ন্যাপার ইত্যাদি মাছ ট্রাই করবেন। সাথে লইট্টা ফ্রাই, টুনা ফিশ যদি পান তাহলে এগুলোও ট্রাই করবেন।
কোথায় থাকবেনঃ
সেন্টমার্টিনে রাতে থাকার জন্য বেশ কিছু উন্নতমানের কয়েকটি হোটেল ও কটেজ রয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় অনেক বাড়িতে পর্যটকদের জন্য থাকার সুব্যবস্থা আছে।
দেখার মত কি কি আছেঃ
সেন্ট মার্টিন্স দ্বীপ বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত একটি প্রবাল দ্বীপ। এটি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ হতে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মায়ানমার-এর উপকূল হতে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত। প্রচুর নারিকেল পাওয়া যায় বলে স্থানীয়ভাবে একে নারিকেল জিঞ্জিরাও বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সমুদ্রপ্রেমিদের কাছে এটি ব্যাপক পরিচিত একটি নাম। বিখ্যাত লেখক,কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ এর দারুচিনির দ্বীপ নামের পূর্ণদৈর্ঘ্য ছায়াছবি দ্বারা এই দ্বীপটির পরিচিতি আরো বেড়ে যায়।
যেখানে যেখানে ঘুরবেনঃ
১/ সেন্টমার্টিন পুরো দ্বীপ
২/ ছেড়াদ্বীপ