সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
রাজতন্ত্র অনুসারী পাহাড়িদের মধ্যে একটা মজার ব্যাপার আছে- যে পাড়াগুলো কারবারী বা হেডম্যানের নাম অনুসারে, সেগুলোর দায়িত্বশীল পরিবর্তনের সাথে সাথে পাড়ার নামও পরিবর্তিত হয়ে নতুন দায়িত্বশীলের নামে হয়ে যায়। চিম্বুক হেডম্যানের নাম অনুসারে পাহাড়ের নাম চিম্বুক। এখন চিম্বুক হেডম্যানের ৩য় প্রজন্ম হেডম্যান, কিন্তু নাম পরিবর্তিত হয়নি। স্থানীয় মুরং আদিবাসীরা ছাড়া সবায় চিম্বুক পাড়াকে চিম্বুকই বলেন। সরকারী নথিপত্র নাম পরিবর্তনকে কঠিনতর করে তুলছে।
এক সময় চিম্বুককে বাংলাদেশের ৩য় সর্বচ্চ পাহাড় ধরা হতো। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এ পাহাড়ের উচ্চতা প্রায় ৩০০০ফুট। বান্দারবান থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে এ পাহাড়টিতে ২টি সরকারী রেস্ট হাউস আছে। আরেকটি নতুন রিসোর্ট নির্মিত হচ্ছে- অনেকটা সাজেক রিসোর্টের আদলে।
এখান থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত দেখা যায়। ১০ বছর আগেও দেশে পাহাড়ে কোনো রেস্ট হাউসে রাত্রিযাপনের বিলাসী ব্যাবস্থা শুধু চিম্বুকেই ছিল।
চিম্বুক আমার কাছে ঠিক পরিচ্ছন্ন লাগে না। একদিকের পুরো দৃশ্যপট বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ডের একটি অসুন্দর বেইজ স্টেশন ও টাওয়ার দিয়ে ঢাকা। অপর দিকে বড় বড় গাছপালা ও রেস্ট হাউসের জন্য দৃষ্টিসীমা ঠিক উন্মুক্ত নয়।
অন্য দিকে ল্যাম্পপোস্ট আর তারের জঞ্জাল- সেই শহরের আবহ। শুধু একটা দিক খোলা দিগন্ত।
আশপাশের আদিবাসী পাড়াগুলো মুরং নৃ-গোষ্ঠী অধ্যাসিত। এখানে মানুষের অতিশয় সরল ও সাধারণ জীবন ধারা দেখা যায়।
কীভাবে যাবঃ
প্রথমে আপনাকে বান্দরবান শহরে যেতে হবে। ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন বান্দরবানের উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি পরিবহন কোম্পানির গাড়ি ছেড়ে যায়। যেমন শ্যামলি, হানিফ, ইউনিক, এস আলম, ডলফিন- এর যেকোনো একটি বাসে চড়ে আপনি বান্দরবানের যেতে পারেন। রাত ১০ টায় অথবা সাড়ে ১১টার দিকে কলাবাগান, সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে এসব বাস বান্দরবানের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান যেতে পারেন। বদ্দারহাট থেকে বান্দারবানের উদ্দেশে পূবালী ও পূর্বানী পরিবহনের বাস বান্দরবানের উদ্দেশে চট্টগ্রাম ছেড়ে যায়।
কোথায় থাকবেনঃ
বান্দরবানে থাকার জন্য হোটেল ও গেস্টহাউজ রয়েছে।
কী খাবেনঃ
এখানে খাবারের অনেক ব্যবস্থা আছে। খাবারের জন্য তাই বিশেষ চিন্তার কিছু নেই।
যা যা দেখবেনঃ
বাংলার দার্জিলিং নামে খ্যাত চিম্বুক পাহাড় বান্দরবানের সবচেয়ে পুরনো পর্যটন স্পট। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৩৫শ’ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এ পাহাড়ের পাশেই রয়েছে আদিবাসী ম্রো সম্প্রদায়ের বসবাস। বান্দরবান শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে মিলনছড়ি এবং শৈল প্রপাতের পরেই চিম্বুক। যেখানে পাহাড়ের চূড়ায় রেস্টুরেন্ট এবং একটি ওয়াচ টাওয়ার আছে। বান্দরবান জেলার সব উপজেলার সঙ্গে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা রক্ষার জন্য এখানে বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ড একটি বেইজ স্টেশন ও টাওয়ার স্থাপন করেছে। পর্যটকদের দৃষ্টিতে যা খুবই আকর্ষণীয়। এছাড়া পাহাড়ের চূড়া থেকে চারদিকের সবুজ প্রকৃতির সৌন্দর্য্য প্রকৃতিপ্রেমীদের টেনে আনে সহজেই।